লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
উজানের ঢল ও কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নদীর পারে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেত।
রোববার (০১ জুন) সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। এতে করে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্ট ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, শনিবার (৩১ মে) বিকেল ৩টায় পানি উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার।
তিস্তা চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছে, টানা কয়েকদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঢুবে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদকৃত ফসল। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন। তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারা ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এছাড়া অন্তত ২০টি চরাঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করেছে পানি। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটির কৃষক মচিয়ার রহমান (৩৫) জানান, গতকাল রাতেই তিস্তার পানি তলানিতে ছিল। গভীর রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করে। অনেকের ধানসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারীর কৃষক হবি মিয়া জানান, গতকাল দিনের বেলা কিছু সময় রোদ থাকা এক একর জমির ভুট্টা নদীর তীরে শুকাতে দিয়েছিলাম। রাতেও সেখানে ভুট্টাগুলো সেখানে বস্তা করে রেখেছিলাম। আজ সকাল ঘুম থেকে ওঠে গিয়ে দেখি পানিতে সকল বস্তা হাবুডুবু করছে। কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হলো বলে দাবি তার।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণের তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় পানি ঢুকছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, উজানে ভারতের সিকিম ও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তিস্তার পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে, তবুও আমরা সতর্ক আছি।