অনলাইন ডেস্কঃ
ভোলার তজুমদ্দিনে চাঁদার দাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে মারধরের পর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী বাদি হয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে তজুমদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেরণায় ভিকটিমকে পরীক্ষার জন্য ওই দিন রাত ১০টার দিকে ভোলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এর আগে, গেল (২৯ জুন) দুপুরে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কামারপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী রুবেল জানান, 'আমার দুই স্ত্রীর মধ্যে প্রথমজনকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করি। আর দ্বিতীয় স্ত্রী ভোলার তজুমদ্দিনে থাকেন এবং তার সাথে আমার ঝামেলা চলছে। কিছু দিন আগে আমি প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকা থেকে ভোলায় বেড়াতে আসি। এরপর শনিবার রাতে আমার দ্বিতীয় স্ত্রী আমাকে খবর দিয়ে তার বাসায় ডাকে। আমি সেখানে গেলে শ্রমিক দল নেতা ফরিদ উদ্দিন ও তার সহযোগী আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন আমাকে আটকে রেখে মারধর করে। এবং আমার দ্বিতীয় স্ত্রী আমার সংসার করবে না বলে আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করেন ওই নেতা ও তার সহযোগীরা। পরে টাকা না পেয়ে আমাকে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করে এবং তাদের দাবিকৃত টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়ানোর জন্য প্রথম স্ত্রীকে খবর দেয়।'
তিনি আরও জানান, 'পরের দিন সকালে আমার প্রথম স্ত্রী আমাকে ছাড়াতে আসলে তার কাছে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। চাঁদার টাকা পুরোপুরি না পেয়ে আবার পুনরায় আমার উপর হামলা করা হয়। একপর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে আমার প্রথম স্ত্রীকে ওই ঘরে রেখে কয়েকজনকে দিয়ে জোর করে আমাকে বাজারে চা খেতে পাঠায়। পৌঁনে ১ ঘণ্টা পর আমি ফিরে এসে দেখি ওই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ। পরে আমি দরজায় নক করলে শ্রমিক দল নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, “এতো তারাতারি আসলি কেন?” এরপর ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখি আমার স্ত্রী কান্নাকাটি করছে এবং তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে আমাকে জানায়। পরে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর শর্তে দুজনকে মুক্তি দেয় ওই নেতারা।'
এদিকে ধর্ষণে শিকার হয়ে ওই নারী রাতে কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। পরে ভুক্তভোগীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশকে পুরো ঘটনাটি বললে তজুমদ্দিন থানা পুলিশের একটি টিম গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা শ্রমিক দল নেতা ফরিদ উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা মিন্টু বলেন, 'এ ঘটনায় বিএনপির কোনো অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী জড়িত থাকলে সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তজুমদ্দিন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহাব্বত খান বলেন, 'ভিকটিমের স্বামী বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় সহযোগিতা করা দ্বিতীয় স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।