মিজানুর রহমান মিলন,
স্টাফ রিপোর্টার :
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলায় মসজিদের ড্রেজার মেশিন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মোঃ বুদা নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সরঞ্জাম ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও ক্ষোভ থামেনি সাধারণ মানুষের মধ্যে।
জানা যায়, ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারি বাংকার চরের বাসিন্দা মোঃ বুদা (পিতা: মৃত আইজল) গত ১২ এপ্রিল ২০২৫ সালে মাঠ মসজিদের একটি ড্রেজার মেশিন নিজের বাড়ির মাটি কাটার অজুহাতে নেয়। ড্রেজারটি ছিল সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাংগামোড় এলাকার মাঠ-মসজিদের আওতায় এবং তখন সেটি মোঃ জাহিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ছিল।
বুদা ড্রেজার নিতে গিয়ে জাহিদুল ইসলামকে বলেন, “আমি গরিব মানুষ বাবা, আমার বাড়ির কিছু মাটি কাটার দরকার, ভাড়ার টাকা নেই।” মসজিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও মানবিকতার জায়গা থেকে জাহিদুল ড্রেজারটি ৩–৪ দিনের জন্য বুদাকে ব্যবহার করতে দেন। তবে শর্ত ছিল, এটি অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না এবং কেউ যেন বিষয়টি জানতে না পারে।
কিন্তু বুদা শর্ত ভঙ্গ করে ড্রেজারটি নিয়ে যান এবং মাসব্যাপী তা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেন। এক মাস পেরিয়ে গেলেও ড্রেজার ফেরত না আসায় জাহিদুল বিষয়টি জানতে খোঁজখবর নেন। পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুদা নিজে ড্রেজার চালাচ্ছেন না, বরং অন্য একজনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে মাটি কেটে তা দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ফুলছড়ি থানার এসআই মোঃ নুর নবী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান তিনি কি নিজে ড্রেজার চালাচ্ছেন। জাহিদুল জানান, “মসজিদের ড্রেজার মোঃ বুদা নিজের প্রয়োজনের কথা বলে নিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।”
বিষয়টি নিয়ে কাতলামারি এলাকার সিয়ার বাজারে এক সালিশ বৈঠকের আয়োজন হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা—
১. মোঃ আয়নাল (পিতা: মোঃ জোবেদ আলি)
২. মোঃ হামিদুল (পিতা: মোঃ হবিজার)
৩. মোঃ মধু মিয়া (পিতা: মৃত মতলেব)
৪. মোঃ সিপন (পিতা: বাছের আলি)
তারা সবাই বুদার প্রতারণার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুদা ও আবু সাইদ এলাকায় একটি প্রভাবশালী চাঁদাবাজ চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের মালামাল নিয়ে এ ধরনের প্রতারণা শুধুমাত্র বেআইনি নয়, এটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলেও মনে করছেন অনেকে।
এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করার সাহস না পায়।