এস এম সালমান হৃদয়, বগুড়া:
বগুড়ার রাজনীতির মাঠে একটি সাহসী, ত্যাগী ও সংগ্রামী নাম মাসুদ রানা মাসুদ। তিনি বগুড়া শহর যুবদলের সাবেক সফল সভাপতি, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং বগুড়া পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডের বারবার নির্বাচিত সাবেক কাউন্সিলর। মানুষের পাশে থাকা, দুর্দিনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া এবং দলের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা—এই তিন গুণেই তিনি তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছেন।
রাজনীতির অঙ্গনে মাসুদ রানা মাসুদের পথচলা শুরু ছাত্রজীবন থেকেই। জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী এই নেতা রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই নির্যাতন, মামলা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু কোনো কষ্টই তাকে দলের প্রতি আনুগত্য থেকে সরাতে পারেনি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১২৩টি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন, যার অনেকগুলোই ছিল শুধুমাত্র তার জনপ্রিয়তা ও প্রভাব কমিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র ও প্রশাসনিক হয়রানির ফলে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছে।
জেল খাটা দিনগুলো তার জীবনে গভীর বেদনার স্মৃতি হয়ে আছে। দীর্ঘদিন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, মায়ের স্নেহ থেকে দূরে, রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়েও তিনি হার মানেননি।
জিজ্ঞাসাবাদের নামে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন, ঘন্টার পর ঘন্টা অমানবিক আচরণ—এসব ছিল তার জীবনের প্রতিদিনের বাস্তবতা। কিন্তু সেই সব নির্যাতনও তার মনোবল ভাঙতে পারেনি। তিনি বিশ্বাস করতেন—“সত্য ও আদর্শের পথ কঠিন হলেও, শেষ পর্যন্ত জয় সেখানেই।”
আজও বগুড়ার সাধারণ মানুষ তাকে স্মরণ করেন একজন মানবিক ও নির্ভীক নেতা হিসেবে। গরিব-দুঃখী, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছিল তার রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। এলাকার মানুষ বলেন—“মাসুদ ভাই ছিলেন শুধু রাজনীতিক নন, তিনি ছিলেন মানুষের আশা-ভরসার নাম।”
যে কোনো সমস্যা বা সংকটে মানুষ তার দ্বারস্থ হত। নিজের ব্যক্তিগত কষ্ট ভুলে তিনি অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছেন সবসময়।
তার রাজনৈতিক জীবনের এই দীর্ঘ লড়াই শুধু একটি ব্যক্তির কাহিনী নয়—এটি একটি আদর্শের গল্প, যেখানে ত্যাগ, নিষ্ঠা আর বিশ্বাস একসাথে মিলিত হয়েছে। দলীয় জীবনে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হলেও, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখন একবাক্যে দাবি তুলেছেন—এই ত্যাগী নেতার প্রতি সুবিচার করতে হবে।
তারা বলেন, দলের প্রতি অবিচল থেকে যিনি নিজের জীবনের সেরা সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, তাকে অবহেলা করা অন্যায়। তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা জোর দাবি জানিয়েছেন—মাসুদ রানা মাসুদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হোক, তার সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হোক, এবং তার উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
একজন প্রকৃত রাজনীতিকের মূল্যায়ন হয় তার ত্যাগ ও মানুষের ভালোবাসায়। বগুড়ার রাজনীতিতে মাসুদ রানা মাসুদ সেই ত্যাগের এক উজ্জ্বল প্রতীক, যিনি অন্যায়ের মুখে মাথা নত করেননি, বরং সংগ্রামকে জীবনের অংশ করে নিয়েছেন।
তার জীবন কাহিনী আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা—যেভাবে আদর্শ ও সততার পথে থেকে মানুষ নিজের অবস্থানকে অটল রাখতে পারে, ঠিক তেমনই উদাহরণ রেখে গেছেন এই সাহসী নেতা।