তারিক আল মুরশিদ গাজীপুর থেকে :
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী এলাকায় আলোচিত সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির চাচা ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতির ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত ‘কাইল্লা জিহাদ’ নামে এক দুর্ধর্ষ ব্যক্তিকে ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিক মামলা ও ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হয়েও সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের নাকের ডগায়।
সূত্র জানায়, কাইল্লা জিহাদের প্রকৃত নাম জিহাদ (বয়স আনুমানিক ৩৫)। চুয়াডাঙ্গা জেলায় জন্ম নেওয়া এই ব্যক্তি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে এলাকায় বখাটে চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে গণপিটুনির শিকার হয়ে গাজীপুরে এসে আশ্রয় নেয়। টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় মতিউর রহমান মতির ক্যাডার বাহিনীতে যোগ দিয়ে সে হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর এক অপরাধী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মতির ক্যাডার বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসেবে কাইল্লা জিহাদ টঙ্গী-চেরাগআলী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। শিল্প কারখানা নিয়ন্ত্রণ, মাদক কারবার থেকে চাঁদাবাজি পর্যন্ত নানা অপকর্মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছে সে। পুবাইল এলাকায় প্লট, গ্রামের বাড়িতে জমি-বাড়ি, এমনকি বিশাল ব্যাংক ব্যালেন্সও গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জুলাই বিপ্লব চলাকালীন সময়ে বিএনপি ও জামায়াতের আন্দোলন দমন করতে মতির নেতৃত্বে কাইল্লা জিহাদসহ তার বাহিনীর সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নেমেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় গাজীপুর ও টঙ্গী এলাকায় হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের একাধিক ঘটনায় তার নাম উঠে আসে। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জাহিদ জিহাদ’ নামের আইডি থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নানা স্লোগান পোস্ট করেছিল যার অসংখ্য স্ক্রিনশট রয়েছে ।
জুলাই বিপ্লবের সময় ছাত্রদের ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টার একাধিক মামলার আসামি । গাজীপুর সদর থানা এলাকায় বর্তমানে প্রকাশ্য ঘোরাফেরা করছে সে, যা নিয়ে এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এনসিপি (ন্যাশনাল কনজারভেটিভ পার্টি) নেতা আকাশ ঘোষ বলেন, “জুলাই বিপ্লবে ছাত্রদের ওপর হামলা মামলার অনেক আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং পুনরায় বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। আমরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যাচাই-বাছাই চলছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের অভিযুক্তদের প্রকাশ্য চলাফেরা ভবিষ্যতে বড় ধরনের নাশকতা বা সহিংসতার আশঙ্কা তৈরি করতে পারে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ চান।