এস এম সালমান হৃদয়, বগুড়া:
বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী মোঃ লিয়াকত আলী প্রামানিক আজ মানবতার ভরসায় জীবনযাপন করছেন। পিতা মৃত মহিউদ্দিন প্রামানিকের দুই পুত্র ও দুই কন্যার মধ্যে লিয়াকত আলী ছিলেন সবার বড়।
ছোট ভাইবোনদের মানুষ করার জন্য তিনি যুবক বয়সেই প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন। প্রথমে সৌদি আরব, পরে কুয়েত ও শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে তিনি সেই টাকা পিতার হাতে তুলে দিতেন। সেই অর্থেই ভাইবোনেরা শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়ে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—আজ সেই লিয়াকত আলী অসহায়, নিঃস্ব এবং অসুস্থ। পিতা মহিউদ্দিন প্রামানিক জীবদ্দশায় ২০ বিঘা জমি ও বসতবাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তি ছোট ছেলের নামে লিখে দেন। প্রবাস থেকে পাঠানো কোটি টাকা আজ ভাইবোনেরা মানুষের মতো মানুষের জন্য ব্যয় না করে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছেন।
বর্তমানে লিয়াকত আলী প্রামানিক সমাজের অবহেলিত এক মানুষ। অসুস্থ অবস্থায় তিনি পড়ে আছেন নিজের গ্রামের এক কোণে। এরই মধ্যে ২০২৫ সালের ২৯ অক্টোবর তাঁর এক বোন তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ির পাশের কবরস্থানের কাছে ফেলে রেখে যান। পরে এলাকাবাসী মানবিক বিবেচনায় তাঁকে উদ্ধার করে একটি ছোট ছাপড়া ঘরে আশ্রয় দেন।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে যিনি পরিবারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, আজ তাঁর পাশে কেউ নেই। তাঁরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—মানবিক বিবেচনায় যেন অসুস্থ লিয়াকত আলীর চিকিৎসা ও থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়।
মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা এই মানুষটি আজ সমাজের দয়া ও সহানুভূতির প্রত্যাশী। তাঁর মতো প্রবাসফেরত অবহেলিতদের পাশে দাঁড়ানো সমাজের প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব।