
মিজানুর রহমান গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামে দেওয়াল কেটে গরু চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে গণপিটুনিতে নিহত তিন চোরের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতরা সবাই বগুড়া জেলার বাসিন্দা।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহতরা হলেন:
১. কাউসার (৫০): বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের বালুকচড়া গ্রামের আলেব্বর আলীর ছেলে।
২. শাহীনুর (৩১): বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের হেরুঞ্জ সাহাপাড়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে।
৩. বুলবুল (৩৮): বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পিরব ইউনিয়নের সিহালী উত্তরপাড়া গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বুলবুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ সকালে নিহতদের মধ্যে দু’জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
ঘটনার বিস্তারিত:
শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে কাটাবাড়ী ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামের কৃষক ছালামের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত ৮-১০ জনের একটি চোরের দল পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে ছালামের গোয়ালঘরের ইটের দেওয়াল কেটে ভেতরে ঢোকে। তারা গরু নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করার সময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে ‘হৈ-চৈ চিল্লা’চিল্লি শুরু করেন।
হৈ-চৈ শুনতে পেয়ে এলাকার শত শত লোকজন এগিয়ে এসে চোরদের ধাওয়া করেন। এসময় চোরেরা পালানোর চেষ্টা করলে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে তিনজন চোর পানিতে লাফিয়ে পড়ে।
এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে পুকুরটি ঘিরে ফেলেন এবং তিনজনকে ধরে ফেলেন। এরপর উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই দু’জন চোরের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে পরদিন রোববার সকালে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলামসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিহত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
এদিকে, খবর পেয়ে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত এ্যাঞ্জেলা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিকভাবে নিহত চোরদের পরিচয় জানা না যাওয়ায় সিআইডি ক্রাইম সিন টিম কাজ শুরু করে। অবশেষে থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় নিহত তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।