
স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি’র মনোনীত প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে কার্যত কোনো নির্বাচনী আমেজ লক্ষ করা যাচ্ছে না। দলটির অভ্যন্তরে অসন্তোষ ও ক্ষোভের কারণেই এই ‘নিস্তেজ’ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যান্য দল যেখানে নির্বাচনী প্রচারণায় সরব, সেখানে বিএনপির স্থানীয় কার্যালয়গুলো অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। এই ‘ঠান্ডা’ নির্বাচনী পরিবেশের প্রধান কারণ হিসেবে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সংস্কারপন্থী প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক সূত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মূলত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংস্কারপন্থী হিসেবে দলের নিয়ম ভঙ্গ করে নির্বাচন করা এক নেতাকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ায় এই ক্ষোভের সৃষ্টি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, নবম সংসদ নির্বাচনে শামীম কাওসার লিংকন সংস্কারপন্থী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন না করে, যিনি একসময় দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন, তাকেই আবার মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ।
এক প্রবীণ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যাঁরা বছরের পর বছর ধরে দল ও জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, কঠিন সময়ে দলের পাশে ছিলেন, তাঁদের বঞ্চিত করে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর ফলে দলের ভেতরে হতাশা তৈরি হয়েছে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী কার্যক্রমে।”
নেতাকর্মীদের এই অভ্যন্তরীণ ক্ষোভের জেরে নির্বাচনী কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রচার-প্রচারণা ও সাংগঠনিক তৎপরতা অন্যান্য দলের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। স্থানীয়রা মনে করছেন, যদি দ্রুত এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন না করা হয় এবং দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের একত্রিত করা না যায়, তাহলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনে বিএনপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তৃণমূলের এই ক্ষোভ যত দিন প্রশমিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে বিএনপি’র নির্বাচনী আমেজ ফিরবে না এবং এর সুযোগ নিতে পারে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো।